পর্ব ৯: বিশ্বাসের সেতু
নিলয় ও ঐশী বুঝতে পারে যে তাদের সম্পর্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হলো বিশ্বাস। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো তাদের সম্পর্ককে কিছুটা নড়বড়ে করে দিয়েছিল, কিন্তু তারা চায় এই বিশ্বাসকে পুনর্গঠিত করতে।
আত্মমূল্যায়ন
নিলয় এক সন্ধ্যায় ঐশীর হাত ধরে বলে,
“আমরা একে অপরকে ভালোবাসি, এটা আমি জানি। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো আমাকে বুঝিয়েছে যে শুধুমাত্র ভালোবাসাই যথেষ্ট নয়। আমাদের মধ্যে পুরোপুরি বিশ্বাস থাকা প্রয়োজন।”
ঐশী মৃদু হেসে বলে,
“তুমিই ঠিক বলেছ। আমি হয়তো আমার অনুভূতিগুলো ঠিকভাবে প্রকাশ করতে পারিনি। কিন্তু আমি চাই আমরা যেন আর কখনো এই ভুলগুলো না করি।”
অতীত ভুল থেকে শিক্ষা
তারা তাদের অতীতের ভুলগুলো নিয়ে আলোচনা করে।
নিলয় বলে,
“আমার কাজের চাপ আমাকে এমন জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল যেখানে আমি তোমার অনুভূতিগুলো বুঝতেই পারিনি। আমি প্রতিজ্ঞা করছি, ভবিষ্যতে এমন কিছু হবে না।”
ঐশীও স্বীকার করে,
“আমি রাহুলের বিষয়ে খোলামেলা হতে পারতাম। তোমার সন্দেহকে এড়ানোর জন্য আমাকে শুরু থেকেই বিষয়টি তোমার সঙ্গে শেয়ার করা উচিত ছিল।”
তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে কোনো বিষয়ই আর গোপন রাখা হবে না।
বিশ্বাস গড়ার নতুন উদ্যোগ
তারা তাদের দৈনন্দিন জীবনে ছোট ছোট উদ্যোগের মাধ্যমে বিশ্বাস গড়ে তোলার চেষ্টা করে।
খোলামেলা যোগাযোগ:
তারা প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা, কাজের চাপ, এবং ব্যক্তিগত চিন্তাগুলো একে অপরের সঙ্গে শেয়ার করে।
নিলয় বলে,
“আজ অফিসে একটা মজার ঘটনা ঘটল। ক্লায়েন্ট আমার প্রেজেন্টেশন দেখে এত খুশি হলো যে সরাসরি কফি অফার করল।”
ঐশী হেসে বলে,
“তোমার কাজের প্রশংসা শুনতে ভালো লাগে। জানো, আমিও আজ একটা নতুন প্রজেক্ট শুরু করেছি।”একসঙ্গে সময় কাটানো:
তারা সপ্তাহান্তে একসঙ্গে সিনেমা দেখা, রান্না করা, বা হাঁটাহাঁটির মতো সহজ কাজগুলো করার পরিকল্পনা করে।পুরনো স্মৃতি স্মরণ:
তারা তাদের সম্পর্কের পুরনো দিনগুলো নিয়ে গল্প করে।
“তুমি মনে করো, আমরা প্রথম কফি শপে গিয়েছিলাম? কতটা নервাস ছিলে তুমি!” বলে হাসে ঐশী।
নিলয়ও হেসে ফেলে, “আর তুমি? সেদিন একটানা পাঁচ কাপ কফি খেলেও কথা বলতে পারছিলে না!”
তৃষা এবং সামির সমস্যা
তৃষা এবং সামি এখনো তাদের জীবনে আছে। যদিও তারা এখন সতর্ক, তবুও এই ব্যক্তিদের কার্যকলাপ তাদের বিশ্বাসের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
তৃষা একদিন নিলয়কে বলে,
“নিলয়, তোমার সঙ্গে কাজ করাটা আমার জন্য দারুণ অভিজ্ঞতা। জানো, তুমি কেমন একজন মানুষ সেটা দেখার জন্য আমি সব সময় মুখিয়ে থাকি।”
নিলয় বিনীতভাবে বলে,
“ধন্যবাদ তৃষা, কিন্তু আমি কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবন আলাদা রাখতে চাই। আমার জীবন সঙ্গীর প্রতি আমি পুরোপুরি দায়বদ্ধ।”
অন্যদিকে, সামি একদিন ঐশীকে অফিসে চিঠি দেয়, যাতে লেখা:
“আমি জানি তোমার জীবন তোমার নিয়মে চলছে। কিন্তু আমার অনুভূতিগুলো বদলায়নি।”
ঐশী সরাসরি সামির কাছে গিয়ে বলে,
“তোমার উচিত আমার কথা বোঝা। আমার জীবন এখন শুধুমাত্র নিলয়ের সঙ্গে। তুমি যদি আমার বন্ধু হিসেবে থাকতে চাও, আমি স্বাগত জানাই, কিন্তু অন্য কোনো আশা করা বৃথা।”
বিশ্বাসের একটি মুহূর্ত
একদিন নিলয় এবং ঐশী একসঙ্গে বসে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করে।
নিলয় বলে,
“আমাদের সম্পর্ক অনেক বাধা পেরিয়ে এসেছে। আমি মনে করি, আমাদের বিশ্বাসই আমাদের শক্তি। তুমি আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।”
ঐশী চোখে পানি নিয়ে বলে,
“আমিও চাই, আমরা সবসময় এভাবেই একসঙ্গে থাকি। আমি তোমার জন্য সব কিছু করতে পারি।”
বিশ্বাসের সেতু দৃঢ় হয়
তারা বুঝতে পারে যে তাদের সম্পর্ক এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি দৃঢ়। তাদের ভালোবাসা আর প্রতিজ্ঞা মিলিয়ে একে অপরের প্রতি নতুনভাবে ভরসা তৈরি হয়েছে।
পর্বের সমাপ্তি।
পরবর্তী পর্বে: পর্ব ১০: একটি কঠিন সিদ্ধান্ত
তাদের জীবনে এমন একটি ঘটনা ঘটবে, যা তাদের সামনে একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে আসবে। তারা কি সেই সিদ্ধান্তে একমত হতে পারবে?
©2024, Easy Tech Solution
0 Comments