পর্ব ১: নতুন শুরু
নিলয় এবং ঐশী। এক বছর আগেও তারা কল্পনাও করতে পারেনি যে এতটা কাছাকাছি আসবে। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে অবশেষে তারা নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে। একসাথে নতুন একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নিয়েছে শহরের এক শান্ত এলাকায়। কাজের ব্যস্ততার ফাঁকে নিজেদের জন্য কিছু সময় বের করে নেওয়াই এখন তাদের একমাত্র লক্ষ্য।
প্রথম সকাল
অ্যাপার্টমেন্টের প্রথম সকাল। ঐশী ঘুম থেকে উঠে দেখে নিলয় ইতিমধ্যেই কফি বানিয়ে টেবিলে রেখেছে।
“তোমার জন্য কফি। আর নাস্তা? টোস্ট আর ডিম ভাজি চলবে?” নিলয় হাসিমুখে বলে।
ঐশী অবাক হয়ে বলে, “তুমি তো দারুণ শেফ হয়ে গেছ! সব কিছু এত মসৃণ চলছে, ভাবতেই পারছি না।”
তারা দু’জনই মনের ভেতর ছোট্ট একটা স্বস্তি অনুভব করে। নতুন জীবনের শুরুটা সত্যিই যেন স্বপ্নের মতো।
প্রথম চ্যালেঞ্জ
কিন্তু যত দিন যেতে থাকে, ততই তাদের জীবনে ছোট ছোট জটিলতা তৈরি হতে শুরু করে। ঐশী অফিসের নতুন প্রজেক্ট নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত। অন্যদিকে, নিলয় তার স্টার্টআপ ব্যবসা দাঁড় করানোর জন্য রাতদিন কাজ করছে।
একদিন রাতে, নিলয় ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরল। বাসায় ঢুকতেই দেখে পুরো ফ্ল্যাটে ছড়ানো-ছিটানো কাপড়, রান্নাঘরে অসমাপ্ত কাজ, আর ঐশী ল্যাপটপে মগ্ন।
নিলয় একটু বিরক্ত হয়ে বলল, “ঐশী, তুমি আজ রান্না করোনি? আমি সারাদিন বাইরে ছিলাম, আর বাসায় ফিরে এই পরিস্থিতি?”
ঐশীও তখন কাজের চাপে ক্লান্ত। জবাব দিল, “তুমি কি মনে কর, শুধু তুমিই কাজ করছ? আমি সারাদিন অফিস সামলে ঘরে এসে যদি সব কাজ করতে যাই, তাহলে কি আর আমার বিশ্রাম লাগবে না?”
তাদের কথোপকথন ধীরে ধীরে তর্কে রূপ নেয়। দুজনেই নিজেদের কাজের চাপ ও ক্লান্তি প্রকাশ করে, কিন্তু সঠিকভাবে মিটমাট করতে পারে না।
ছোট সমস্যা, বড় বোঝা
পরের কয়েকদিন একে অপরের সঙ্গে খুব একটা কথা হয় না। নীরবতা যেন তাদের মধ্যে অদৃশ্য এক দূরত্ব তৈরি করে। তবে রাতে বিছানায় শুয়ে দুজনেই ভাবতে থাকে—এটাই কি তাদের সম্পর্কের ভবিষ্যত?
একদিন সকালে নিলয় কফি বানাতে গিয়ে দুর্ঘটনাক্রমে ঐশীর প্রিয় মগটি ভেঙে ফেলে।
ঐশী এসে দেখে, নিলয় অপরাধীর মতো দাঁড়িয়ে আছে। কাঁচুমাচু মুখে নিলয় বলে, “সরি, ঐশী। আমি আসলে বুঝতে পারিনি…”
ঐশী হেসে বলে, “আরে, এটা নিয়ে এত ভাবছ কেন? মগটা নতুন কিনে নেব। কিন্তু আমাদের যে এই ছোট ছোট সমস্যাগুলো এত বড় হয়ে দাঁড়াচ্ছে, তা নিয়ে ভাবা দরকার, তাই না?”
নিলয় মাথা নিচু করে সম্মতি জানায়। “আমার মনে হয়, আমাদের নিজেদের জন্যও সময় বের করতে হবে। শুধু কাজ আর কাজ করে গেলে তো সম্পর্কের মজাটা হারিয়ে যাবে।”
ঐশী মাথা নেড়ে বলল, “তাই তো! আমরা দুজনেই যেন একে অপরকে ভুলে যাচ্ছি। চলো আজ সন্ধ্যায় বাইরে ডিনার করি?”
একসাথে এগিয়ে চলা
নিলয় এবং ঐশী বুঝতে পারে যে তাদের সম্পর্কের চাবিকাঠি হলো একে অপরের প্রতি সময় দেওয়া। তারা নিজেদের মধ্যে নতুন এক বোঝাপড়ার সূচনা করে।
পর্বের সমাপ্তি।
পরবর্তী পর্বে: অতীতের ছায়া
যেখানে একটি পুরনো সম্পর্কের ছায়া তাদের বর্তমানকে নাড়িয়ে দেবে।
©2024, Easy Tech Solution
0 Comments