পর্ব ১৫: অন্ধকারের ছায়া
নিলয় এবং ঐশী যখন মনে করেছিল সবকিছু ঠিক হয়ে গেছে, তখনই তৃষার ফোনের খবর তাদের মনকে ভারাক্রান্ত করে তোলে।
তৃষার কথাগুলো ভেবে নিলয় সিদ্ধান্ত নেয়, সে বিষয়টি আরও গভীরভাবে খতিয়ে দেখবে। তৃষার সঙ্গে দেখা করতে সে অফিসে যায়। তৃষা বলে,
“তোমার প্রজেক্টের সমস্যা মিটে গেছে ঠিকই, কিন্তু আমি শুনেছি, তোমার ক্লায়েন্ট কোম্পানির সঙ্গে নতুন একটি ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এতে তোমার ক্যারিয়ার এবং ব্যক্তিগত জীবন আবার ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।”
নিলয় চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞেস করে,
“তৃষা, তুমি এ তথ্য কোথা থেকে পেয়েছো? আমি কীভাবে নিশ্চিত হবো যে এটা সত্যি?”
তৃষা কিছুক্ষণ চুপ থেকে উত্তর দেয়,
“আমি নিশ্চিত করতে পারি না। কিন্তু আমি চাই তুমি সতর্ক থাকো।”
এদিকে ঐশী সামির পাঠানো চিঠির ঘটনা ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু সামি অফিসে তার প্রতি আরও নজর দেওয়া শুরু করে। একদিন সামি তার সামনে এসে সরাসরি বলে,
“ঐশী, আমি জানি তুমি আমাকে গুরুত্ব দাও না। কিন্তু তোমার জীবনেও এমন কিছু হতে পারে যা তোমাকে আমার উপর নির্ভর করতে বাধ্য করবে।”
ঐশী অবাক হয়ে প্রশ্ন করে,
“এমন কথা কেন বলছো? তুমি কি কিছু জানো?”
সামি কেবল রহস্যময়ভাবে হাসে এবং বলে,
“ঠিক সময়ে সবকিছু জানতে পারবে।”
রাতের বেলা নিলয় এবং ঐশী ফোনে কথা বলে।
“ঐশী, তৃষা বলছে আমার প্রজেক্ট নিয়ে নতুন কোনো সমস্যা তৈরি হচ্ছে। আমি বুঝতে পারছি না, কারা এর পেছনে আছে।”
ঐশী হঠাৎ মনে করিয়ে দেয়,
“সামি কিছুদিন ধরে অদ্ভুত আচরণ করছে। তার কথাগুলোও সন্দেহজনক।”
নিলয় চিন্তিত হয়ে বলে,
“আমাদের মনে হচ্ছে এই পুরো বিষয়গুলো পরস্পরের সঙ্গে জড়িত। আমি চেষ্টা করব অফিসের ভেতরের কিছু তথ্য বের করতে।”
পরের দিন, নিলয় অফিসে একটি ইমেইল পায়, যা ক্লায়েন্ট কোম্পানির সঙ্গে তার প্রজেক্ট বাতিলের বিষয়ে। ইমেইলটি পড়ে তার সন্দেহ হয়।
“এই ইমেইলটা কি সত্যি? নাকি কেউ আমার প্রোফাইল ব্যবহার করে এমন কিছু করছে?”
ঐশীও একই সময়ে একটি কল পায়।
“আপনার স্বামী কি সঠিক পথে আছে? তার চারপাশের মানুষজনকে ভালো করে চিনে নিন।”
ঐশী ভীত হয়ে পড়ে। সে নিলয়কে ফোন করে বিষয়টি জানায়।
“নিলয়, আমার মনে হচ্ছে আমরা কোনো বড় ষড়যন্ত্রের মধ্যে পড়েছি।”
তাদের জীবনে আসা এই অন্ধকারের ছায়া ধীরে ধীরে গভীর হতে থাকে। নিলয় এবং ঐশী ঠিক করে, একসঙ্গে এই বিপদের রহস্য উদঘাটন করবে।
নিলয় অফিসে তার তথ্য প্রযুক্তি বিভাগে কাজ করা এক বন্ধুর সাহায্যে ইমেইলের উৎস খুঁজে বের করে। দেখা যায়, ইমেইলটি সামি এবং রাজীব মিলে পাঠিয়েছে।
নিলয় ঐশীকে জানায়,
“তোমার অফিসের সামি এবং আমার অফিসের রাজীব মিলে আমাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। তারা শুধু আমাদের ক্যারিয়ার নয়, আমাদের সম্পর্কও ধ্বংস করতে চায়।”
ঐশী হতাশ হয়ে বলে,
“তাদের উদ্দেশ্য কী, নিলয়? কেন তারা এত নিচে নামছে?”
নিলয় এবং ঐশী সিদ্ধান্ত নেয়, তারা আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেবে। তারা সব প্রমাণ একত্রিত করে এবং পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে।
একদিন সকালে রাজীব এবং সামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা পুলিশের সামনে স্বীকার করে,
“আমাদের উদ্দেশ্য ছিল নিলয় এবং ঐশীর জীবন ধ্বংস করা। আমরা তাদের সুখ সহ্য করতে পারিনি।”
অবশেষে নিলয় এবং ঐশী শান্তি ফিরে পায়। তারা বুঝতে পারে, তাদের সম্পর্ক শুধুমাত্র ভালোবাসার নয়, বরং আস্থা এবং একসঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতায় শক্তিশালী।
শেষ পর্বে: নতুন ভোরের সূচনা
তাদের জীবনের সব ঝড় কাটিয়ে নিলয় এবং ঐশী কীভাবে নতুন করে শুরু করবে?
©2024, Easy Tech Solution
0 Comments