পর্ব ৪: তৃতীয় ব্যক্তি
নিলয় এবং ঐশীর মধ্যে দূরত্ব বেড়েই চলেছে। তারা দুজনেই নিজেদের কাজ ও শখে ডুবে থাকার চেষ্টা করে, কিন্তু সম্পর্কের টানাপোড়েন তাদের মন থেকে মুছে যায় না। ঠিক তখনই তাদের জীবনে এক নতুন চরিত্রের আবির্ভাব ঘটে, যা তাদের সম্পর্ককে আরও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে।
নতুন সহকর্মী
নিলয়ের স্টার্টআপে নতুন একজন সহকর্মী যোগ দেয়। তার নাম তৃষা—একজন দক্ষ, প্রফেশনাল, এবং বন্ধুসুলভ মানুষ। তৃষা খুব দ্রুতই নিলয়ের সঙ্গে কাজের জন্য বোঝাপড়া গড়ে তোলে। অফিসের প্রেজেন্টেশনে তারা একসঙ্গে কাজ শুরু করে, এবং এই সময়ে তৃষার ব্যক্তিত্ব নিলয়ের ওপর প্রভাব ফেলে।
একদিন অফিসের একটি প্রেজেন্টেশনের পর তৃষা বলে,
“তুমি সত্যিই অনেক ভালো কাজ করো, নিলয়। আমি অনেক কিছু শিখছি তোমার থেকে।”
নিলয় হেসে বলে,
“তৃষা, তুমি নিজেও খুব প্রতিভাবান। আমাদের টিমে তুমি যোগ দেওয়ায় কাজ অনেক সহজ হয়েছে।”
তৃষা আন্তরিকভাবে তার প্রশংসা গ্রহণ করে। তবে এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ধীরে ধীরে একটু গভীর হয়ে ওঠে।
ঐশীর জীবনে নতুন বন্ধু
এদিকে, ঐশী তার অফিসের এক সহকর্মী, আরমান, সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে শুরু করে। আরমান একজন সদালাপী, রসবোধসম্পন্ন মানুষ, যে সহজেই অন্যদের মন জয় করে নিতে পারে। অফিসে একদিন কাজ শেষে, আরমান বলে,
“ঐশী, তোমার কাজের ধরন আমার খুব ভালো লাগে। আর জানো? কাজের বাইরে তোমার কথা বলার ভঙ্গিটা আরও মজার।”
ঐশী হেসে বলে,
“তুমি তো খুব ভালো কথা বলো, আরমান। কখনো কখনো এই অফিসের চাপ থেকে মুক্তি পেতে তোমার মতো মানুষ দরকার।”
তারা কাজের বাইরে কিছু সময় একসঙ্গে কাটাতে শুরু করে, এবং ঐশী বুঝতে পারে যে আরমানের সঙ্গ তাকে কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে।
দূরত্ব আরও বাড়ে
নিলয় এবং ঐশী দুজনেই বুঝতে পারে যে তাদের জীবনে নতুন এই মানুষগুলো এক ধরনের স্বস্তি এবং আনন্দ আনছে, যা তারা নিজেদের সম্পর্কে খুঁজে পাচ্ছিল না। কিন্তু এই তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি তাদের ভেতরের দূরত্ব আরও বাড়িয়ে তোলে।
একদিন রাতে, ঐশী নিলয়কে বলে,
“তোমার অফিসের সেই তৃষা কেমন? তুমি কি প্রায়ই তার সঙ্গে কাজ করছ?”
নিলয় একটু অস্বস্তি নিয়ে বলে,
“হ্যাঁ, তৃষা খুব ভালো কাজ করে। তবে কাজের বাইরে কিছুই নেই।”
ঐশী মুচকি হেসে বলে,
“আচ্ছা, আমি কিন্তু শুনেছি তৃষা খুব বন্ধুসুলভ। তার সঙ্গে সময় কাটাতে ভালো লাগে?”
নিলয় কিছু না বলে নিজের কাজে মন দেয়।
পরিস্থিতির মোড়
অন্যদিকে, নিলয়ও লক্ষ্য করে যে আরমানের নাম বারবার ঐশীর কথায় উঠে আসে।
একদিন সে সরাসরি জিজ্ঞাসা করে,
“ঐশী, তুমি আরমানের সঙ্গে এত সময় কাটাচ্ছ? তোমাদের মধ্যে কিছু চলছে না তো?”
ঐশী অবাক হয়ে বলে,
“তোমার কি মনে হয়? আরমান আমার অফিস কলিগ, আর সে শুধু বন্ধু। কিন্তু তুমি তৃষার কথা কেন বলছ?”
দুজনেই বুঝতে পারে যে তারা একে অপরের প্রতি ঈর্ষান্বিত হচ্ছে। কিন্তু তারা এটি প্রকাশ করার চেয়ে নিজেদের মধ্যে আরও বেশি দূরত্ব তৈরি করে।
একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত
একদিন, তৃষা নিলয়কে অফিসের পর কফি শপে দেখা করতে বলে। তৃষা বলে,
“নিলয়, আমি জানি আমাদের বন্ধুত্বটা বেশ গাঢ় হয়েছে। আমি আসলে…”
তৃষা কথার মাঝেই থেমে যায়। নিলয় বুঝতে পারে, সে কিছু বলতে চাইছে যা তাদের সম্পর্ককে জটিল করে তুলতে পারে।
অন্যদিকে, আরমান ঐশীকে সরাসরি বলে ফেলে,
“ঐশী, আমি তোমার প্রতি কিছু অনুভব করছি। তুমি কি কখনো ভেবেছো আমাদের সম্পর্কে?”
ঐশী চুপ হয়ে যায়। তার মনের মধ্যে প্রশ্ন জাগে, এই নতুন মানুষেরা তাদের জীবনে ঠিক কতটুকু প্রভাব ফেলছে?
পর্বের সমাপ্তি।
পরবর্তী পর্বে: পর্ব ৫: মোড়ের সামনে
তারা দুজনই তাদের সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হবে। কি থাকবে তাদের ভবিষ্যৎ?
©2024, Easy Tech Solution
0 Comments