Clickadilla

Easy Technical Solutions

ভালোবাসার দ্বিতীয় অধ্যায় (Love Unfolded) - পর্ব ১১

 

Love Unfolded

পর্ব ১১: দূরত্বের বন্ধন

 

নিলয় দেশের বাইরে গেছে তিন মাস হতে চলেছে। প্রতিদিন তাদের ভিডিও কল হয়, তবে সময়ের ফারাক এবং নিলয়ের কাজের চাপের কারণে সেই কথোপকথনও ক্রমেই সংক্ষিপ্ত হয়ে আসছে। প্রথম দিকে ঐশী বিষয়টি বুঝতে চেষ্টা করলেও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার একাকীত্ব এবং অভিমান বাড়তে থাকে।

একদিন রাতে, নিলয় কল করে বলে,
“আজ খুব ক্লান্ত লাগছে, ঐশী। প্রেজেন্টেশন শেষ করেই বিছানায় পড়ে গিয়েছিলাম। তোমার দিন কেমন কাটল?”

ঐশী দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,
“তুমি এখন খুব ব্যস্ত, তাই না? আমাদের কথাগুলোও যেন একটা দায়িত্বের মতো হয়ে যাচ্ছে।”

নিলয় কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে,
“আমি জানি, আমি তোমার সময় দিতে পারছি না। কিন্তু এখানে সবকিছুই খুব কঠিন, আর কাজের চাপ প্রচুর। বিশ্বাস করো, আমি তোমার কথা প্রতিদিন ভাবি।”

ঐশী তার মনের কষ্ট লুকিয়ে রাখে, কিন্তু তার অভিমান কাটে না।


এদিকে, ঐশীর অফিসের প্রজেক্টে সামি আবারও তার ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করে। একদিন লাঞ্চের সময় সামি বলে,
“তোমার হাসি আগের মতো নেই, ঐশী। সব ঠিক আছে তো?”

ঐশী জবাব দেয়,
“সব ঠিক আছে। কাজের চাপ একটু বেশি।”

সামি মৃদু হেসে বলে,
“তুমি জানো, আমি সবসময় এখানে আছি। যদি কখনো মনে হয় তোমার কথা বলার প্রয়োজন আছে, আমাকে বলো।”

ঐশী কিছু বলে না, কিন্তু তার মনের ভেতরে সামান্য দ্বিধা কাজ করে।


অন্যদিকে, নিলয়ের জীবনে তৃষা ধীরে ধীরে জায়গা করে নিচ্ছে। তৃষা একটি প্রজেক্টে নিলয়ের সহকর্মী, এবং তারা প্রায়ই একসঙ্গে কাজ করে। তৃষা তার প্রতি আগ্রহ দেখালেও, নিলয় নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করে।

একদিন তৃষা সরাসরি বলে,
“নিলয়, তুমি কেন এত দূরত্ব বজায় রাখছো? আমি শুধু একজন বন্ধু হতে চাই। তোমার একাকীত্ব আমি বুঝি।”

নিলয় কড়া স্বরে উত্তর দেয়,
“তৃষা, আমি বিবাহিত। আমার জীবনে ঐশী ছাড়া আর কারও জায়গা নেই।”

তৃষা একটু বিব্রত হয়, তবে বিষয়টি নিয়ে আর কথা বাড়ায় না।


সময় যত এগোয়, তাদের মধ্যে দূরত্বের প্রভাব আরও স্পষ্ট হতে থাকে। একদিন ঐশী নিলয়কে কল করে রাগী গলায় বলে,
“তুমি কি আসলেই আমাদের সম্পর্কে আগের মতো আগ্রহী? নাকি কাজ আর নতুন জীবন তোমাকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে?”

নিলয় হতভম্ব হয়ে বলে,
“ঐশী, তুমি এমন কথা কেন বলছ? আমি সবকিছু তোমার জন্যই করছি। তুমি জানো না আমি এখানে কতটা কষ্ট করছি।”

ঐশী চোখের জল মুছে বলে,
“আমাদের মধ্যে এখন আর সেই আগের মতোন কিছু নেই, নিলয়। আমি শুধু চাই তুমি ফিরে আসো। আমি চাই আমাদের সম্পর্ক আগের মতো হোক।”


এই কথোপকথনের পর, নিলয় এবং ঐশী দুজনেই নিজেদের অবস্থান নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে শুরু করে। তারা বুঝতে পারে, দূরত্ব তাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করেছে।

নিলয় সিদ্ধান্ত নেয়,
“আমাকে আরও চেষ্টা করতে হবে। আমি ঐশীর কাছে প্রতিজ্ঞা করেছি যে আমাদের সম্পর্ক কখনো দুর্বল হবে না। এই দূরত্ব শেষ করতে হবে।”

অন্যদিকে, ঐশী নিজের মনের ভুল ভাঙার চেষ্টা করে।
“আমি জানি, নিলয় আমাকে ভালোবাসে। আমাকে আমাদের ভালোবাসার ওপর ভরসা রাখতে হবে।”


পর্বের সমাপ্তি।
পরবর্তী পর্বে: পর্ব ১২: বন্ধনের পুনর্গঠন
তারা কি দূরত্বের এই প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারবে? নাকি কোনো নতুন বাধা তাদের সম্পর্ককে আরও কঠিন করে তুলবে?

©2024, Easy Tech Solution
 

Post a Comment

0 Comments