দেবতাখুম হল বাংলাদেশের বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলায় অবস্থিত একটি অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যপূর্ণ স্থান। এটি দেশের সর্বোচ্চ পিক, যেখানে পাহাড়ের শীর্ষ থেকে breathtaking দৃশ্য দেখা যায়। দেবতাখুমের উচ্চতা প্রায় ১,২৮০ মিটার, এবং এটি ট্রেকিংয়ের জন্য জনপ্রিয় একটি জায়গা।
এখানে পৌঁছাতে হলে দীর্ঘ পাহাড়ি পথ পাড়ি দিতে হয়, যা অনেকের কাছে একটি দুঃসাহসিক অভিযান হিসেবে পরিচিত। দেবতাখুম থেকে রোয়াংছড়ি, থোয়াইং, নোয়াপাড়া ও নাফাখুমের মত আরও অনেক সুন্দর দৃশ্য দেখা যায়।
দেবতাখুম বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পাহাড়ি শীর্ষগুলির মধ্যে একটি এবং এটি বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলায় অবস্থিত। এই স্থানটি প্রকৃতিপ্রেমী, ট্রেকিং ও অ্যাডভেঞ্চার ভালোবাসা মানুষদের জন্য আদর্শ গন্তব্য। দেবতাখুমের পথ দুর্গম এবং চ্যালেঞ্জিং, তবে এর শৃঙ্গ থেকে যে দর্শনীয় প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখা যায়, তা মনমুগ্ধকর।
এটি একাধারে জনপ্রিয় ট্রেকিং স্পট এবং সেই সঙ্গে স্থানীয় সংস্কৃতি ও জীববৈচিত্র্য পর্যবেক্ষণের জন্যও বিখ্যাত।
কিভাবে যাবেন
১. ঢাকা থেকে বান্দরবান
- প্রথমে ঢাকা থেকে বান্দরবান আসতে হবে। আপনি বাস, গাড়ি বা বিমান যোগে বান্দরবান পৌঁছাতে পারেন।
- বাস: ঢাকা থেকে বান্দরবান যাওয়ার জন্য প্রাইভেট ও সরকারি বাস সার্ভিস রয়েছে। সময় লাগবে প্রায় ১২-১৪ ঘণ্টা।
- গাড়ি: ব্যক্তিগত গাড়ি বা ক্যাবের মাধ্যমে আপনি ঢাকা থেকে বান্দরবান যেতে পারেন।
- বিমান: বান্দরবান বিমানবন্দর না থাকায়, আপনি কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে সড়কপথে বান্দরবান পৌঁছাতে পারবেন।
২. বান্দরবান থেকে রোয়াংছড়ি
- বান্দরবান শহর থেকে রোয়াংছড়ি যেতে ৩-৪ ঘণ্টা সময় লাগবে। এটি একটি পাহাড়ি রাস্তায় যাতায়াত এবং স্থানীয় পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে সহজেই পৌঁছানো যায়।
- রোয়াংছড়ি থেকে দেবতাখুম
- রোয়াংছড়ি থেকে দেবতাখুম পৌঁছাতে ট্রেকিং করতে হবে। এটি ৪-৫ ঘণ্টার দীর্ঘ ও চ্যালেঞ্জিং পথ। গাইডের সহায়তায় এই ট্রেকিং পথটি নিরাপদে সম্পন্ন করা যায়।
- যাত্রা শুরুর আগে অবশ্যই একজন গাইড নিয়োগ করুন, কারণ পথ জানার জন্য গাইডের সাহায্য প্রয়োজন।
কি কি দেখার আছে
দেবতাখুমের পিক
- দেবতাখুমের শীর্ষ থেকে প্রাকৃতিক দৃশ্য অবলোকন করা যায়, যেখানে দূরের পাহাড়, নদী, ঘন বনজঙ্গল, গ্রামগুলো একসাথে মিলে অসাধারণ দৃশ্য তৈরি করে। এটি সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিউপয়েন্ট।
থোয়াইং পাড়া
- রোয়াংছড়ি এলাকায় থোয়াইং পাড়া নামে একটি পাহাড়ি গ্রাম রয়েছে, যা স্থানীয় জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতির সাক্ষী। এখানে মায়ানমারের সাথে সীমান্ত রয়েছে, এবং স্থানীয় চাকমা জনগণের জীবনযাত্রা দেখতে পারেন।
নোয়াপাড়া
- নোয়াপাড়া একটি ছোট পাহাড়ি গ্রাম, যেখানে স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রা, তাদের অতি প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সংস্কৃতির এক স্বতন্ত্র পরিচয় পাওয়া যায়।
নাফাখুম ও টোনাপাহাড়
- দেবতাখুম থেকে নাফাখুম এবং টোনাপাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। নাফাখুম বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় জলপ্রপাত এবং টোনাপাহাড়ের এক মনোরম দৃশ্য রয়েছে।
রোয়াংছড়ির পাহাড়ি প্রাকৃতিক দৃশ্য
- রোয়াংছড়ির আশপাশে রয়েছে অনেক পাহাড়ি এলাকাসহ সুন্দর নদী ও জলপ্রপাত, যা পর্যটকদের জন্য অনবদ্য দৃশ্য প্রদান করে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
- প্রবেশ পারমিট: এই এলাকায় প্রবেশের জন্য আপনাকে পারমিট নিতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি সংগ্রহ করতে হবে।
- গাইড নিয়োগ: সুরক্ষার জন্য একজন অভিজ্ঞ গাইড নিয়োগ করা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে পাহাড়ি পথের জন্য।
- যাত্রার প্রস্তুতি: ট্রেকিংয়ের জন্য ভালো জুতা, পোশাক, খাবার, পানির বোতল এবং জরুরি ওষুধ সাথে রাখুন।
- সতর্কতা: এই এলাকাটি দুর্গম এবং মাঝে মাঝে সড়ক বিপদগ্রস্ত হতে পারে, তাই নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার বিষয়ে খেয়াল রাখুন।
কবে যাবেন
দেবতাখুম ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে ভালো সময় হল নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, কারণ এই সময় আবহাওয়া শীতল এবং পথ চলা অনেক সহজ হয়। বৃষ্টির সময় এই অঞ্চলটি অনেক দুর্গম হয়ে পড়ে, তাই বর্ষাকালে এড়িয়ে চলা ভালো।
দেবতাখুম এক অসাধারণ স্থান, যা প্রকৃতি প্রেমিকদের জন্য এক অনবদ্য অভিজ্ঞতা।
©2024, Easy Tech Solution
0 Comments