নবজাতক শিশুর যত্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সচেতনতার সঙ্গে পালন করা উচিত। একটি নবজাতক শিশু সঠিক যত্ন পেলে তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশ স্বাভাবিকভাবে ঘটে। এখানে নবজাতক শিশুর যত্নের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা দেওয়া হলো:
১. মায়ের দুধ খাওয়ানো
প্রথম ৬ মাসের জন্য শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানো উচিত। মায়ের দুধে সমস্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান থাকে যা শিশুর সঠিক বৃদ্ধি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গঠনে সহায়ক।
২. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
নবজাতক শিশুর ত্বক খুবই সংবেদনশীল, তাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। শিশুর প্রতিদিনের স্নান করা প্রয়োজন নাও হতে পারে, তবে প্রতিদিন তার মুখ, হাত, এবং নিতম্ব পরিষ্কার করা উচিত। নরম কাপড় বা তোয়ালে ব্যবহার করে আলতোভাবে মুছে দিন।
৩. ঘুমের সময় এবং নিরাপত্তা
শিশুদের প্রথম কয়েক মাসে ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নবজাতক শিশুরা দিনে প্রায় ১৬-১৮ ঘণ্টা ঘুমায়। শিশুকে তার পিঠের উপর শোয়াতে হবে, পেটের উপর নয়, যাতে সঠিকভাবে শ্বাস নিতে পারে। শিশুর খাটে অতিরিক্ত খেলনা বা নরম বালিশ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন, কারণ এগুলো শ্বাসকষ্টের কারণ হতে পারে।
৪. তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ
নবজাতক শিশুর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় কম। তাই শিশুকে গরম বা ঠান্ডা থেকে রক্ষা করার জন্য উপযুক্ত পোশাক পরান। ঘরের তাপমাত্রা প্রায় ২৪-২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা উচিত।
৫. সঠিক চিকিৎসা পরামর্শ
নিয়মিত ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত। নবজাতকের টিকাদান সূচি অনুযায়ী তাকে প্রয়োজনীয় টিকা দিতে হবে। এছাড়া, কোনোরকম অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৬. মমতা এবং মানসিক যত্ন
শিশুর শারীরিক যত্নের পাশাপাশি মানসিক যত্নও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নবজাতক শিশু মায়ের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসে। মায়ের কোল, আদর এবং কথোপকথন শিশুর মানসিক বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৭. নাভির যত্ন
শিশুর নাভি পড়ে যাওয়ার পর সেটি শুকাতে কিছুদিন সময় নেয়। নাভির এলাকা শুকিয়ে ফেলার জন্য কোনো অতিরিক্ত পণ্য ব্যবহার না করে শুধু পরিষ্কার ও শুকনো রাখার চেষ্টা করুন।
নবজাতকের যত্নের ক্ষেত্রে ধৈর্য এবং ভালোবাসার সঙ্গে কাজ করা জরুরি। যত্নের প্রতিটি ধাপে শিশুর আরাম ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা মা-বাবার প্রধান দায়িত্ব।
©2024, Easy Tech Solution
0 Comments