অন্ধকারের ছায়া
রাতের অন্ধকারে শহরটি যেন গুমট হয়ে উঠেছিল। প্রত্যেকটি গলি, প্রতিটি বাড়ি, প্রতিটি ছাদের উপর লুকিয়ে ছিল এক রহস্যময় ছায়া। সবাই জানতো, আজকের রাতটা বিশেষ; শহরের তাবড় তাবড় গ্যাংস্টাররা এখানে একত্রিত হবে। তাদের নেতা, নাহিদ, একজন মিষ্টি হাসির অধিকারী, কিন্তু তার চোখে এক অদ্ভুত নিষ্ঠুরতা।
রাত দশটার সময়, শহরের কেন্দ্রে একটি পুরনো বাড়ির কাছে সবাই জড়ো হতে লাগল। সেখানেই প্রথমবারের মতো নাহিদ একটি বিরল ড্রাগের ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছিল। কিন্তু শহরের একজন নিরলস সাংবাদিক, সায়মা, এই ঘটনা সম্পর্কে আগে থেকেই জানতে পেরেছিল। তার অন্তর্দৃষ্টি বলেছিল, এই সন্ধ্যা শহরের জন্য কালরাত হতে পারে।
সায়মা সুকৌশলে বাড়ির কাছে গিয়ে কিছু নির্জন কোণে লুকিয়ে পড়ল। তার হাতে ছিল একটি ক্যামেরা, আর সে বিশ্বাস করছিল, আজকের রাতে সে ইতিহাস তৈরি করতে চলেছে। কিন্তু বাড়ির ভেতরে তার যা শুনতে হলো, তা তার আশা ভঙ্গ করে দিল।
"ড্রাগের ব্যবসা শুরু করার জন্য আমাদের মধ্যে অন্তত একজনকে শিকার করতে হবে," নাহিদ বলল, তার কণ্ঠস্বর গম্ভীর। সায়মা অবাক হয়ে শুনল, তার জন্য কী কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সায়মার মনে হল, এ রাতেই যদি কিছু করা না হয়, তাহলে পুরো শহর বিপদে পড়তে পারে। সে দ্রুত তার ফোনে 911 নম্বরে কল করতে উদ্যত হলো। কিন্তু ঠিক তখনই বাড়ির দরজা খুলে গেল এবং একটি ছায়া বেরিয়ে এল।
"তুমি এখানে কী করছো?" এক অচেনা পুরুষ সায়মার দিকে তেড়ে আসল। সায়মা দ্রুত পিছনে হটতে চেষ্টা করল, কিন্তু অন্য একটি ছায়া তাকে ধরে ফেলল।
"তুমি জানো না, তুমি কী করছো, সাংবাদিক," ছায়াটি বলল। "এখানে খুব ভয়ঙ্কর কিছু ঘটতে চলেছে।"
সায়মা বুঝতে পারল, তার জীবন বিপন্ন। কিন্তু সে হাল ছাড়বে না। সে প্রাণপণ লড়াই করতে প্রস্তুত। সায়মা ক্যামেরাটি বের করে সেই ছায়াটির দিকে তাকিয়ে ছবি তুলতে শুরু করল। "তুমি জানো, আমি তোমাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ সংগ্রহ করছি।"
এরপর শুরু হলো এক পাল্টাপাল্টি। সায়মা নাহিদের গ্যাংয়ের কাছে বন্দী হয়ে পড়ে। কিন্তু সে জানতো, সে যদি সাহসী হয়, তাহলে বের হওয়ার পথ খুঁজে পাবে।
অন্ধকারের গভীরে, সায়মার লড়াই চলছিল। সে তার ক্যামেরা এবং বুদ্ধি দিয়ে কিভাবে পালাবার পরিকল্পনা করবে, সেই নিয়ে চিন্তা করতে লাগল।
শেষ পর্যন্ত, সে একটি ছোট সুযোগ খুঁজে পেল। সায়মা জানালার কাঁচ ভেঙে বাইরে লাফ দিল। সে হন্তদন্ত হয়ে দৌড়াতে লাগল, শহরের অন্ধকারের মধ্যে, কিন্তু নাহিদের গ্যাং এখনও তার পেছনে।
শহরের রাস্তায় এক ঝাঁক বুলেট গুলি ছুটে গেল। সায়মা সবকিছু পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে থাকল। সে জানত, তার কাহিনী শেষ হয়নি, বরং শুরু হয়েছে।
নাহিদের মতো একজন কুখ্যাত গ্যাংস্টারের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সায়মার সাহস তাকে শহরের মুক্তির প্রতীক বানিয়ে তুলবে।
রাতের অন্ধকারে, সায়মা আরেকটি অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছিল। এ রাতের পরে, কিছুই আগের মতো হবে না।
©2024, Easy Tech Solution
0 Comments